By Laws/ Regulations
এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর
পরিচালনা নীতিমালা
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম:
(ক) এ জাদুঘরটি “এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর” নামে পরিচিত হবে।
(খ) এ জাদুঘরটি জানুয়ারি ২০১৯ থেকে প্রদর্শনীর জন্য উন্মুক্ত হয়।
২। সংজ্ঞাসমূহ:
বিষয় এবং প্রসঙ্গের পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকলে এই নীতিমালায়-
(ক) “নিদর্শন” (Antiquities) বলতে বুঝাবে-
(১) নিদর্শনসমূহ ১৭০০ হতে ১৯০০ শতক সময়কালীন হতে হবে;
(২) মানব কর্মকাণ্ডজাত যে-কোনো প্রাচীন অস্থাবর বস্তু যা শিল্পকলা, স্থাপত্য, চারুকলা, কারুকলা, সাহিত্য, প্রথা, মূল্যবোধ, ইতিহাস, রাজনীতি, ধর্ম, যুদ্ধোপকরণ, বিজ্ঞান অথবা সভ্যতা ও সংস্কৃতির যে-কোনো ধরনের উপকরণ ও নিদর্শন;
(৩) যে-কোনো ধরণের প্রাচীন অস্থাবর নিদর্শন যা ঐতিহাসিক, জাতিতাত্ত্বিক (ethnological), নৃতাত্ত্বিক, নন্দনতাত্ত্বিক (aesthetic), শৈল্পিক, সামাজিক, সামরিক অথবা বৈজ্ঞানিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ;
(৪) পুরাতাত্ত্বিক স্থাবর নিদর্শনে সংযুক্ত অথবা সন্নিহিত যে-কোনো ধরণের তোরণ, দরজা, জানালা, পাইপ, দেয়াল-প্যানেল, ছাদ, উৎকীর্ণ লিপি (inscripton), দেয়ালচিত্র, দারুশিল্প (wood work), ধাতব শিল্পকর্ম অথবা ভাস্কর্য অথবা অন্যান্য উপকরণ।
(খ) “কাউন্সিল” বলতে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি কাউন্সিলকে বুঝাবে।
(গ) “সোসাইটি” বলতে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি বুঝাবে;
(ঘ) “জাদুঘর” বলতে এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর বুঝাবে;
(ঙ) “পর্ষদ” বলতে ৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অধীনে গঠিত এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর পরিচালনা পর্ষদকে বুঝাবে;
(চ) “সভাপতি” বলতে পর্ষদ-এর সভাপতি এবং এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি উভয়কেই বুঝাবে;
(ছ) “সহ-সভাপতি” বলতে এশিয়াটিক সোসাইটির সহ-সভাপতিকে বুঝাবে;
(জ) “কোষাধ্যক্ষ’ বলতে এশিয়াটিক সোসাইটির কোষাধ্যক্ষকে বুঝাবে;
(ঝ) “সাধারণ সম্পাদক” বলতে এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদককে বুঝাবে;
(ঞ) “সদস্য” বলতে জাদুঘর পরিচালনা পর্ষদ-এর সদস্যকে বুঝাবে, যাদের নিয়ে পর্ষদ গঠিত;
(ট) “যথাযথ কর্তৃপক্ষ” বলতে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি কাউন্সিলকে বুঝাবে;
(ঠ) “কর্তৃপক্ষ” বলতে এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর পর্ষদকে বুঝাবে;
(ড) “কিউরেটর” তথা জাদুঘরের প্রধান নির্বাহী বলতে ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত কিউরেটরকে বুঝাবে;
(ঢ) “জাদুঘরের তহবিল” বলতে এই নীতিমালার ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অধীনে গঠিত জাদুঘরের তহবিল বুঝাবে;
(ণ) “নির্ধারিত” বলতে এই নীতিমালার অধীন প্রণীত প্রবিধানমালা অথবা বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি কাউন্সিল অথবা সরকারি কোনো নির্দেশনা অথবা আদেশ দ্বারা “নির্ধারিত” বুঝাবে;
৩। জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট:
(ক) ঢাকার আদি নবাবদের স্মৃতি বিজড়িত নিমতলী প্রাসাদের প্রবেশপথ বা দেউড়ি- বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাকে সংরক্ষণ করে তাতে ১৭০০ থেকে ১৯০০ শতকের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে জাদুঘর স্থাপন করা হয়েছে। এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটিকে জাদুঘরে রূপান্তরের পাশাপাশি একে একটি শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। জাদুঘরটি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জ্ঞানচর্চা ও গবেষণার একটি কেন্দ্র। এটিকে শিক্ষা ও বহুমুখী গবেষণা ও পর্যটকদের জন্য একটি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সর্বোপরি সাধারণ ঐতিহ্য প্রেমিক নাগরিক, দেশী-বিদেশী দর্শক, ঢাকা প্রেমিক, গবেষক ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিকট অতীত ঐতিহ্য তুলে ধরার উদ্দেশ্যে এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
(খ) ঢাকার মোগল নায়েব-নাজিমদের জন্য ২৫০ বছর পূর্বে নির্মিত প্রাসাদ ভবনের মূল অংশ সংরক্ষণের অভাবে ইতোমধ্যে ধ্বংস হয়ে গেছে। একটি অংশ বর্তমানে বিদ্যমান যা সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় রাজধানী ঢাকার ৪০০ বছর পূর্তি উদযাপন কর্মসূচির আওতায় ২০০৯-২০১১ সালে সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু নিয়মিত ব্যবহার না করায় পুনরায় তা কার্যকারিতা হারাচ্ছিল এবং স্থায়ীভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছিল।
(গ) সংরক্ষণকৃত ভবনটি জাদুঘরে রূপান্তর করায় এর রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত হবে এবং ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। জাদুঘর স্থাপনের ফলে দেশের একটি বস্তুগত (tangible) সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা পাবে; গবেষণা ও ইতিহাস রচনার সংরক্ষণাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। দর্শক, গবেষক ও নতুন প্রজন্ম ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। এই জাদুঘরকে কেন্দ্র করে ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কিত সেমিনার, প্রদর্শনী, অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হবে। জাদুঘর স্থাপিত হওয়ায় ভবনটি একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে যা পুরাতন মোগল ঢাকা এবং নতুন ঢাকা মহানগরীর মধ্যে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করবে। এশিয়াটিক সোসাইটি ১৯৫২ সালে নিমতলী দেউড়িতে কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করে যাত্রা শুরু করে। এ কারণে ধ্বংস থেকে বেঁচে যাওয়া প্রাসাদ অংশে জাদুঘর স্থাপন করে সোসাইটি ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষার দায়িত্ব পালন করল।
(ঘ) “এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর” বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠিান হবে।
৪। সাধারণ নির্দেশনা:
(ক) জাদুঘরের নীতিনির্ধারণ সম্পর্কিত কার্যাবলি ও তত্ত্বাবধান পর্ষদের উপর ন্যস্ত থাকবে। পরিচালনা ও প্রশাসনিক বিষয়াদি এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের উপর ন্যস্ত থাকবে।
(খ) ইউনেস্কো (UNESCO), আইকম (ICOM) এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি অনুসারে জাদুঘর পরিচালনা করা হবে।
৫। প্রধান পৃষ্ঠপোষক:
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি জাদুঘরেরও প্রধান পৃষ্ঠপোষক হবেন।
৬। পর্ষদ নিম্নবর্ণিত ১১ (এগারো) সদস্য সমন্বয়ে কাউন্সিল কর্তৃক গঠিত হবে:
(ক) পদাধিকার বলে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি এই পর্ষদের সভাপতিও হবেন;
(খ) পদাধিকার বলে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এই পর্ষদের সদস্য হবেন;
(গ) পদাধিকার বলে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ এই পর্ষদের সদস্য হবেন;
(ঘ) পদাধিকার বলে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক এই পর্ষদের সদস্য-সচিব হবেন;
(ঙ) পদাধিকার বলে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সম্পাদক এই পর্ষদের সদস্য হবেন;
(চ) কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত একজন কাউন্সিল সদস্য এই পর্ষদের সদস্য হবেন;
(ছ) কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত সোসাইটির একজন সদস্য-ইতিহাসবিদ এই পর্ষদের সদস্য হবেন;
(জ) কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত সোসাইটির একজন সদস্য-জাদুঘরবিদ এই পর্ষদের সদস্য হবেন;
(ঝ) কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত সোসাইটির একজন সদস্য-শিল্পী এই পর্ষদের সদস্য হবেন;
(ঞ) কাউন্সিল কর্তৃক মনোনীত সোসাইটির একজন সদস্য-স্থপতি এই পর্ষদের সদস্য হবেন; এবং
(ট) জাদুঘরের কিউরেটর পদাধিকার বলে পর্ষদের সদস্য হবেন।
৭। পর্ষদ ও সদস্যগণের মেয়াদকাল:
(ক) পদাধিকার বলে নিয়োজিত সদস্যগণ ব্যতীত যে-কোনো সদস্য তাঁর নিযুক্তির তারিখ হতে দুই বৎসরের মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবেন এবং এক মেয়াদ অতিবাহিত হওয়ার পরে তিনি সর্বোচ্চ আরো একবার নিয়োগযোগ্য হবেন;
(খ) পদাধিকার বলে নিয়োজিত সদস্য ব্যতীত যে-কোনো সদস্য যে-কোনো সময় পর্ষদের সভাপতির নিকট স্বাক্ষরযুক্ত পত্র দিয়ে স্বীয় পদ ত্যাগ করতে পারবেন;
(গ) কেবল পর্ষদের কোনো পদ শূন্য থাকলে অথবা নীতিমালার কোনো বিচ্যুতির কারণে পর্ষদের কোন কাজ বা কার্যধারা স্থগিত হবে না।
৮। জাদুঘরের কার্যাবলি:
(ক) ১৭০০ থেকে ১৯০০ শতকের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন (antiquities), শিল্পকলা ও সাহিত্যের নিদর্শন, জাতিতাত্ত্বিক নিদর্শন, ঐতিহাসিক নিদর্শন, স্মৃতিচিহ্ন, ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্প এবং মানবসৃষ্ট নিদর্শন (artifacts), বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ড, শ্রুতিচিত্রণ (audio-visual) ভিত্তিক প্রামাণ্য দলিল এবং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য সংশ্লিষ্ট এবং এই জাতীয় অন্যান্য বস্তু ও নিদর্শন সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শন;
(খ) সংগৃহীত সকল নিদর্শনের তালিকা প্রণয়ন ও ক্যাটালগ প্রকাশ। তবে শর্ত থাকে যে, জাদুঘরে নিদর্শন উপহারদাতার নাম, ঠিকানা, আলোকচিত্র ইত্যাদি তথ্য ডকুমেন্টেশনের ক্ষেত্রে উল্লেখ ও সংরক্ষণ করতে হবে এবং তা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে উপহারদাতার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে;
(গ) সাময়িকী, জার্নাল, গ্রন্থ, সংকলন, ডিজিটাল ইমেজ, ভিডিও ডকুমেন্টস, ভিউকার্ড, পোস্টার এবং নিদর্শনের অনুকৃতি, স্মৃতিচিহ্ন ইত্যাদি তৈরি, প্রকাশ, প্রচার, দেশি-বিদেশি প্রদর্শনী ও মেলায় অংশগ্রহণ, বিনিময় ও বিপণন;
(ঘ) বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক, সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্যভিত্তিক প্রদর্শনী, সম্মেলন, বক্তৃতামালা, সেমিনার এবং সভার আয়োজন;
(ঙ) এই নীতিমালার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কাউন্সিলের পূর্বানুমোদনক্রমে, কোনো বিদেশি জাদুঘর ও বিদেশি অথবা আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে চুক্তি, সমঝোতা স্মারক, স্কলার এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বা অনুরূপ কোনো কর্মকাণ্ড সম্পাদনের জন্য চুক্তি সম্পাদন করিতে পারবে।
৯। পর্ষদের দায়িত্বাবলি:
(ক) জাদুঘরের যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নিদর্শন এবং নমুনার সার্বিক ব্যবস্থাপনা, তত্ত্বাবধান ও নিরাপত্তা বিধান;
(খ) জাদুঘরের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন;
(গ) জাদুঘরে রক্ষিত নিদর্শনাদি সংরক্ষণ, ভবিষ্যতে আরো সংগ্রহ, সংগৃহীত নিদর্শনভিত্তিক মৌলিক গবেষণা ও আনুষঙ্গিক গ্রন্থাদি প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা;
(ঘ) জাদুঘর সংগ্রহের উপর গবেষণা ও প্রকাশনার ব্যবস্থা;
(ঙ) কাউন্সিলের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক ঐতিহ্য প্রচার ও প্রদর্শনের নিমিত্ত দেশের ভিতরে প্রদর্শনী, সম্মেলন, সেমিনার, বক্তৃতা এবং কর্মশালা আয়োজন করবে;
(চ) সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে জাদুঘরের বিশেষ কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং বেসরকারি সূত্র হতে জাদুঘরের উন্নয়নের জন্য তহবিল সংগ্রহ;
(ছ) জাদুঘরের প্রয়োজনে কোনো কাজে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব প্রদান করবে এবং তার জন্য সম্মানী প্রদান করবে;
(জ) এই নীতিমালা বা প্রণীত প্রবিধানমালার বিধান বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ;
(ঝ) উপরোল্লিখিত কার্যাবলির সহায়ক অথবা আনুষঙ্গিক অনুরূপ যে-কোনো কাজ;
(ঞ) পর্ষদ জাদুঘরের কোনো নিদর্শন সংগ্রহ বহির্ভূতকরণ (de-accession) অথবা পর্ষদ যদি সেই নিদর্শনটি জাদুঘরে রাখবার অনুপযুক্ত মনে করেন সে বিষয়ে মতামত প্রদান; এবং
(ট) জাদুঘরের কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পর্ষদ কর্তৃক প্রয়োজনীয় কমিটি গঠন।
১০। পর্ষদের সভাপতি:
(ক) সোসাইটির সভাপতি পদাধিকার বলে পর্ষদের সভাপতি হবেন;
(খ) তিনি জাদুঘর সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সময় সময় প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করবেন;
(গ) তিনি পর্ষদের সভায় সভাপতিত্ব করবেন;
(ঘ) তিনি জাদুঘরের সংগ্রহ, প্রদর্শনী, প্রকাশনা বৃদ্ধি ও উন্নয়নকল্পে সদস্য-সচিব ও কিউরেটরকে নির্দেশনা প্রদান করবেন।
১১। পর্ষদের সদস্য-সচিব:
(ক) সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক পদাধিকারবলে পর্ষদের সদস্য-সচিব হবেন;
(খ) তিনি সভাপতির সাথে পরামর্শক্রমে পর্ষদের সভা আহ্বান এবং পরিচালনা করবেন;
(গ) তিনি পর্ষদের সভার আলোচ্য-সূচি নির্ধারণ এবং সভার কার্যবিবরণী যথাযথ লিপিবদ্ধ নিশ্চিত করবেন;
(ঘ) তিনি জাদুঘরের কিউরেটরের কার্যাবলী তদারকি করবেন এবং প্রয়োজনীয় নিদের্শনা প্রদান করবেন।
১২। কিউরেটর:
(ক) পর্ষদ জাদুঘরের জন্য একজন কিউরেটর বা জাদুঘরের প্রধান নির্বাহী নিয়োগ করবে। তিনি জাদুঘরের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হবেন এবং নিয়োগের শর্তাবলী অনুযায়ী উক্ত পদের দায়িত্ব পালন করবেন;
(খ) ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লিখিত জাদুঘরের কার্যাবলি যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য এবং জাদুঘরের সার্বিক প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন;
(গ) পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কিউরেটর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন;
(ঘ) জাদুঘরের উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়াদি, মানব সম্পদ উন্নয়ন ও পরিকল্পনা এবং প্রশাসন তত্ত্বাবধান ও পরিচালনার জন্য দায়ী থাকবেন;
(ঙ) কাউন্সিল বা পর্ষদ কর্তৃক জাদুঘরের ওপর সময় সময় প্রদত্ত দায়িত্বাবলি পালনে কিউরেটর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন;
(চ) জাদুঘরের কার্যাবলি সম্পর্কে পর্ষদের সভাপতি ও সদস্য-সচিবকে অবহিত করবেন;
(ছ) তিনি পর্ষদ কর্তৃক সময় সময় প্রদত্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
১৩। সহকারী কিউরেটর:
(ক) পর্ষদ জাদুঘরের জন্য একজন সহকারী কিউরেটর নিয়োগ করবেন। তিনি নিয়োগের শর্তাবলী অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন;
(খ) সহকারী কিউরেটর জাদুঘরের সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা হবেন এবং কিউরেটর-এর সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নির্দেশক্রমে জাদুঘর পরিচালনার জন্য যথা প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।
১৪। কর্মকর্তা, প্রমুখ নিয়োগ:
দক্ষভাবে প্রশাসন পরিচালনার জন্য পর্ষদ বিধি-বিধানের আলোকে জনবল কাঠামোতে নির্ধারিত শূন্যপদে জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১৫। পর্ষদের সভা:
(ক) পর্ষদ প্রতি দুই মাসে ন্যূনপক্ষে একটি সভায় মিলিত হবে, যার তারিখ পর্ষদের সভাপতির সাথে আলোচনাক্রমে সদস্য-সচিব স্থির করবেন;
(খ) পর্ষদের ন্যূনপক্ষে পঞ্চাশ শতাংশের অধিক সংখ্যক সদস্যের লিখিত অনুরোধক্রমে সভাপতি যথাযথ মনে করলে বিশেষ সভা আহবান করতে পারবেন;
(গ) ন্যূনপক্ষে পঞ্চাশ শতাংশ সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম হবে;
(ঘ) সভাপতি, পর্ষদের সকল সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং তাঁর অনুপস্থিতিতে উপস্থিত সহ-সভাপতি সভায় সভাপতিত্ব করবেন;
(ঙ) প্রত্যেক সদস্যের একটি ভোট থাকবে এবং ভোটের সমতার ক্ষেত্রেও সভার সভাপতি একটি অতিরিক্ত তথা ফলাফল নির্ধারণী ভোট দিবেন;
(চ) পর্ষদ সভার সিদ্ধান্তাবলী রেকর্ডভুক্ত এবং সদস্যগণের মধ্যে বিতরণ করতে হবে এবং তা চূড়ান্তকরণের (confirmation) জন্য পরবর্তী পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করতে হবে।
১৬। জাদুঘরের তহবিল গঠন ও ব্যবহার:
(১) নিম্নরূপভাবে জাদুঘরের তহবিল গঠিত হইবে-
(ক) জাদুঘর পরিচালনার জন্য সোসাইটির অধীনে “বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর” শিরোনামে এর তহবিল সংরক্ষিত হবে;
(খ) সরকারি মঞ্জুরি;
(গ) স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তি প্রদত্ত অনুদান;
(ঘ) পর্ষদ কর্তৃক সংগৃহীত তহবিল;
(ঙ) জাদুঘরের প্রকাশনা ও নিদর্শনাদির অনুকৃতি, স্মৃতি নিদর্শন বিক্রয়, প্রবেশ টিকিট ইত্যাদির বিক্রয়লব্ধ আয়;
(চ) কাউন্সিলের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে আন্তর্জাতিক অথবা বিদেশি সংস্থা হতে প্রাপ্ত অনুদান;
(ছ) তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে অথবা ব্যাংকে গচ্ছিত তহবিল সূত্রে লভ্য সুদ বা মুনাফার প্রাপ্ত আয়;
(জ) কাউন্সিলের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে পর্ষদ কর্তৃক অন্যান্য বৈধ উৎস হতে সংগৃহীত অর্থ;
(ঝ) তহবিল হতে জাদুঘরের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করা যাবে;
(ঞ) সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কোনো খাতের তহবিল বা এর অংশবিশেষ জাদুঘরে বিনিয়োগ করা যাবে;
(২) বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত বাণিজ্যিক ব্যাংকে জাদুঘরের তহবিল রক্ষিত ও লেনদেন হবে।
১৭। বার্ষিক বাজেট বিবরণী:
পর্ষদের পক্ষে জাদুঘরের কিউরেটর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতি অর্থবছরের একটি বাজেট বিবরণী, যাহা বার্ষিক বাজেট বিবরণী নামে অভিহিত হবে, তা কোষাধ্যক্ষের মাধ্যমে কাউন্সিলে উপস্থাপন করবেন। এতে সেই অর্থ বছরের জন্য প্রাক্কলিত আয়-ব্যয়ের হিসাব থাকবে এবং সরকারের নিকট হতে সেই অর্থবছরের জন্য যে পরিমাণ সরকারি মঞ্জুরি চাওয়া হবে, তার উল্লেখ থাকবে।
১৮। হিসাবরক্ষণ ও নিরীক্ষা:
(ক) কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে জাদুঘর তার যাবতীয় আয় ও ব্যয়ের হিসাব সংরক্ষণ করবে এবং হিসাবের বার্ষিক বিবরণী প্রস্তুত করবে;
(খ) কাউন্সিল যেরূপ উপযুক্ত মনে করবেন, সেরূপে জাদুঘরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিরীক্ষিত হবে;
(গ) জাদুঘরের কিউরেটর নিরীক্ষা প্রতিবেদনের বিষয়ে সোসাইটিকে সহযোগিতা করবে।
১৯। বার্ষিক প্রতিবেদন:
(ক) পর্ষদ, প্রতি অর্থবছর সমাপ্ত হবার পর যথাশীঘ্র সম্ভব, সেই অর্থবছরে পরিচালিত বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বার্ষিক প্রতিবেদন কাউন্সিলে পেশ করবে।
(খ) কাউন্সিল পর্ষদের নিকট যে-কোনো প্রতিবেদন, প্রত্যুত্তর, বিবরণী, প্রাক্কলন, পরিসংখ্যান অথবা অন্য যে-কোনো বিষয়ের উপর তথ্য চাইতে পারবে এবং পর্ষদ এই ধরনের সকল চাহিদা পূরণে সম্মত থাকবে।
২০। প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা:
পর্ষদ, কাউন্সিলের অনুমোদনক্রমে এই নীতিমালা এবং নীতিমালার অধীনে প্রণীত নিয়মাবলীর সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ নহে সেরূপ ক্ষেত্রেও এই নীতিমালার উদ্দেশ্যপূরণ এবং বাস্তবায়নকল্পে প্রবিধান প্রণয়ন করতে পারবে।
সাধারণ সম্পাদক
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি